আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পাঁচ সরকারি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
বুধবার বিকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার।
গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে অনুষ্ঠিত এ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ব্যাংকারসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার পাঁচ জনের মধ্যে চার জন ব্যাংকার ও একজন আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), যাকে প্রশ্ন ও উত্তরফাঁসের মূল হোতা বলে বলছেন গোয়েন্দারা। এদের গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হাফিজ আক্তার জানান, কয়েকটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫-১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে ৬০ কোটি টাকা। প্রশ্ন নিতে যারা টাকা দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়, তাদের ‘গোপন বুথে’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করানো হয়। এভাবে ৬০-৭০ ভাগ এমসিকিউ এর সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন এমন দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর তালিকা পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
“জড়িত সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায় প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহসানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটির আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।”
গত ৬ নভেম্বর বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন পাঁচটি ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১টি ‘অফিসার ক্যাশ’ শুন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযানের বর্ণনা দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, গত ৫ নভেম্বর রাতে এ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের তথ্য আসার পর ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে পরীক্ষার দিন (৬ নভেম্বর) সকাল ৭টায় প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের একজন স্বপন অগ্রিম টাকা নিয়ে সেই পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্র বুঝিয়ে দেন। এরপর উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।