একই পশুতে কুরবানি ও আকিকার বিধান


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24


কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে এলেই কুরবানির পাশাপাশি আরো যে মাসয়ালা নিয়ে সমাজে আলোচনা সৃষ্টি হয় সেটি হলো আকিকা। আকিকা আদায়ের মাসনুন সময় থাকলেও নানা কারণে অবিভাবকরা সেটি করেন না- ফলে ঈদুল আজহার সময়েই আমাদের সমাজে আকিকার আলোচনা ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই তখন কুরবানি ও আকিকাকে একীভূত করার নিয়ম-কানুন জানতে চান অনেকে।

চট্টগ্রামের জামিয়া মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারির মুহাদ্দিস ও একাধিক গবেষণাধর্মী গ্রন্থ প্রণেতা মাওলানা আশরাফ আলি নিজামপুরি বলেন- “কোরবানি ও আকিকা আলাদাভাবেই করা উচিৎ। তবে একত্রে করলে আদায় হবে না তা নয়। একত্রে করলেও কোরবানী-আকিকা দুটোই আদায় হবে। কারণ আকিকাও এক ধরনের কোরবানি। হাদীস শরীফে আকিকার ওপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর এখানে ‘নুসুক’ অর্থ কোরবানি”।

সুতরাং আকিকাও যখন এক প্রকারের কোরবানি তখন একটি গরু বা উট দ্বারা একাধিক ব্যক্তির (সাত জন পর্যন্ত) আলাদা-আলাদা কোরবানি আদায় হওয়ার হাদিসগুলো থেকে কোরবানি-আকিকা একত্রে আদায়ের অবকাশও প্রমাণিত হয়। এটা শরীয়তের পক্ষ হতে প্রশস্ততা যে, গরু বা উটের ক্ষেত্রে একটি‘জবাই’ সাত জনের সাতটি জবাইয়ের স্থালাভিষিক্ত গণ্য হয়। একারণে একটি উট বা গরু সাতজনের পক্ষে যথেষ্ট হয়।

রাজধানীর উত্তরার স্বনামধন্য দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া বাইতুস সালামের শিক্ষাসচিব ও সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মানসুর আহমাদ বলেন, আকিকার ক্ষেত্রে মুস্তাহাব হচ্ছে ছেলের জন্যে দু’টি ছাগল এবং মেয়ের জন্যে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করা। সামর্থ না থাকলে ছেলের ক্ষেত্রেও একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করা যায়। এতে সমস্যার কিছু নেই। (সুনানে নাসায়ি: ৪২১২; সুনানে আবু দাউদ: ২৮৪৩; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২৪৭৩১)

শরিয়তের বিধান অনুযায়ী “নুসুক” অর্থাৎ কোরবানি- আকিকা ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি গরু সাতটি ছাগলের সমান। এই হিসাবে কেউ যদি কোরবানির গরুতে আকিকার অংশ নিতে চায় তাহলে সামর্থবান হলে ছেলের জন্যে দুই অংশ নেয়া উত্তম হবে। অক্ষম হলে এক অংশ নিলেও চলবে।

মনে রাখতে হবে- কোরবানির জন্তুতে আকিকার অংশ নেয়া কেবল জায়েয, উত্তম নয়। উত্তম হচ্ছে আকিকা স্বতন্ত্রভাবে করা এবং সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে করা। ওইদিন না পারলে চৌদ্দতম দিনে করা। তাতেও অপারগ হলে একুশতম দিনে করা। একান্ত অপারগতা থাকলেই কেবল বিলম্ব করা যেতে পারে।

মিরপুরস্থ উচ্চতর ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ- ঢাকার পরিচালক ও ঐতিহ্যবাহী লালমাটিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমি বলেন, স্বাভাবিকভাবে আকিকা করা মুস্তাহাব। সাধারণ আকিকার পশুর ব্যবহার ঠিক কোরবানির পশুর মতই। ফলে তা তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এক ভাগ পরিবার, এক ভাগ সাদাকা ও এক ভাগ হাদিয়ার জন্য। ইমাম নববী রহ. বলেন, ‘মুস্তাহাব হলো আকিকার গোশত নিজেরা খাওয়া, গরিবদের মাঝে দান করা এবং বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনকে হাদিয়া পাঠানো। যেমন কোরবানির ক্ষেত্রে করা হয়” ।

তাছাড়া, আকিকার পশুর গোশত আকিকাদাতা স্বয়ং, যার জন্য আকিকা সে নিজে, পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-অনাত্মীয়, ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবাই আহার করতে পারবেন। কাঁচা গোশত হাদিয়া দিতে পারবেন অথবা রান্না করেও খাওয়াতে পারবেন-(ই’লাউস সুনান:১৭/১২৬,ফতোয়ায়ে শামি:৫/২৩৬)।