দেশে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা, এক বছরে আট হাজারের অধিক


bangladesh bank


দেশে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। গত এক বছরে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে আট হাজার ২৭৬টি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এই তিন মাসেই বেড়েছে তিন হাজার ৯৬২টি জানা গেছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এক কোটি টাকা বা এর বেশি আমানত রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এখন ৮৩ হাজার ৮৩৯টি।

বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের প্রায় সাড়ে ৪৩ শতাংশই কোটিপতিদের দখলে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দেশে কোটিপতির প্রকৃত সংখ্যা কত সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে আমানতকারীর ব্যাংক হিসাব থেকে এ বিষয়ে একটি ধারণা করা যায়। বাস্তবে কোটিপতির সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ার এই প্রবণতাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এর মানে একটি বিশেষ শ্রেণির কাছেই দিন দিন আয় ও সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল এ শ্রেণির মানুষই ভোগ করছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কোটিপতিদের তথ্য থাকার পরও কোনো ধরনের অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে তাঁদের আয়ের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান করা দরকার। তা না হলে কোটিপতির সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। এতে আয়বৈষম্যও কমবে না। এমনিতেই আমাদের গিনি কো-এফিশিয়েন্ট সূচক অত্যন্ত বেশি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে অর্থনীতির আকার ক্রমেই বড় হচ্ছে। প্রতিবছরই বাড়ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়। এতে মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা বেড়েছে। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুণগত মান না বাড়ায় সমাজের একটি শ্রেণির কাছেই বেশি সম্পদ ও অর্থ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৯৫ হাজার ২১১টি। এর মধ্যে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮৩৯টি।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর শেষে দেশে কোটিপতির অ্যাকাউন্ট ছিল ৭৯ হাজার ৮৭৭টি। ফলে তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে তিন হাজার ৯৬২টি।

এ ছাড়া ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৭৫ হাজার ৫৬৩টি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে আট হাজার ২৭৬টি।