দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাঙালির গৌরব ও বাংলাদেশের উন্নয়ন মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সব বাধা মোকাবিলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
আজ বুধবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ছয় মাসের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করে দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর এক নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সারা বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। আর মেট্রো রেল চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশ বৈদ্যুতিক, দূর নিয়ন্ত্রিত এবং দ্রুততম যোগাযোগের যুগে প্রবেশ করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতি সারবিশে^ মর্যাদা পেয়েছে। আজকে আমরা আরেকটি নতুন অহংকারের পালক বাংলাদেশের জনগণের মাথার মুকুটে সংযোজিত করলাম।
সরকার প্রধান বলেন, যেকোনো কাজ করতে গেলে অবশ্যই সাহসের প্রয়োজন হয়, সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে প্রতিটি কাজ পরিকল্পনা নিয়ে সম্পন্ন করেছে। যে কারণে মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলের উদ্বোধনের ফলে একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে চারটি মাইলফলক ছুঁলো বাংলাদেশ। প্রথমত, মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক যানের যুগে প্রবেশ করলো। তৃতীয়ত, ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যান এটি, যেটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি ধাপ। চতুর্থত, বাংলাদেশ দ্রুত গতি সম্পন্ন যানের যুগে প্রবেশ করলো। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মেট্রোরেল।
আরও পড়ুনঃ “আজকে পুরো দেশ খুশি, অথচ বিএনপি খুশি হতে পারছে না”
শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল পরিচালনায় অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা থাকবে না। এটি পরিচালনায় আমরা নিজেরাই স্মার্ট নাগরিক তৈরি করবো। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব হবে।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বক্তব্য দেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এমপি অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী স্বাগত বক্তব্য দেন এবং ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক মেট্রোরেলের অগ্রগতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দিনটি উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকেট, ৫০ টাকার ম্মরক নোট, খাম এবং ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী টিকেট কাউন্টার থেকে মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে ইটিকেট ক্রয় করে মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হন। তাঁর বোন শেখ রেহানাও টিকিট ক্রয় করে প্রথম যাত্রায় তাঁর সঙ্গী হন। তিনি স্টেশনে একটি গাছের চারাও রোপণ করেন।