ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার ঘোষণা আসার সাথে সাথেই এক রাতের ব্যবধানে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক রাতের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতি পাল্লা (১ পাল্লা= ৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। কোনো কোনো বিক্রেতা এক পাল্লা ৪৫০ টাকাও চাইছে।
যে পেঁয়াজ গতকাল সকালেও ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দর ছিল তা আজ সকালে সেই মানের পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।
এদিকে, দাম বাড়তে শুরু করায় ক্রেতাদের মধ্যেও বেড়েছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনার প্রবণতা। পাইকারি ক্রেতাদের অভিযোগ, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির করার অপচেষ্টা করছেন আড়তদাররা। দাম বাড়া নিয়ে অজুহাতের শেষ নেই বিক্রেতাদের।
আড়তে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা জানান, কোন কোন আড়ত মালিক তাদের জানিয়েছেন মাল বিক্রি করা হবে না। প্রতিটি আড়তই পেঁয়াজে ভরপুর। আর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পর এক রাতেই দেশের বাজারে আগে আসা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৭-১৮ টাকা কি করে বেড়ে যায় এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
এদিকে কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতিবছর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। এরমধ্যে সংরক্ষণ দুর্বলতায় পচে যায় ৩০ শতাংশ যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ইতোমধ্যে ভারত থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এসব পরিসংখ্যান বলছে, দেশে পেঁয়াজের কোন ঘাটতি নেই।
এর আগে, গতকাল পেঁয়াজ রপ্তানি আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধের ঘোষণা করেছে ভারত। গতকাল সোমবার দিনভর দেশের তিনটি প্রধান স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসেনি। পরে রাতে ভারত সরকারের রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা দেশটির আমদানিকারকদের হাতে আসে।
এর আগে, গত বছরও ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় অস্তির হয়ে ওঠে দেশের পেঁয়াজের বাজার। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ভারত। এতে বাজারে হুহু করে বাড়তে শুরু করে দাম। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে শতক হয়, দ্বিশতক হয়।
বাংলাদেশ চাহিদা মেটাতে যতটুকু পেঁয়াজ আমদানি করে, তার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। ভারত বন্ধ করে দিলেই কেবল ব্যবসায়ীরা অন্য দেশে পেঁয়াজ খুঁজতে শুরু করেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হয় পেঁয়াজ। পরে ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল গত মার্চ মাসে। এরপর থেকে আমদানি হচ্ছিল। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের ওপর ৫% আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।