হংকংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বহাল থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি ও অস্ত্র বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। শিগরিই এই ঘোষণা কার্যকর করা হবে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। চীনের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব বলেন,হংকংয়ের ওপর নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপ করে চীন আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছে। তারপরও যুক্তরাজ্য বেইজিংকে সমর্থন করছে। সরকারি এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থণ জানিয়েছে দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি।
এবছরের জুনের শেষ দিকে হংকংয়ের জন্য নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রবর্তন করে বেইজিং। এই আইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চীনের হাতে তুলে দিতে পারবে হংকং কর্তৃপক্ষ। সমালোচকেরা বলছেন, এই আইনের কারণে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থী কর্মীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার সুযোগ পাবে চীন।
চীনের ওই পদক্ষেপের পর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। আইনটি কার্যকরের পর হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য। এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং।
নতুন আইন বেইজিং কিভাবে প্রয়োগ করছে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব বলেন, ‘আমি কেবল বলতে চাই: যুক্তরাজ্য এবং সারা দুনিয়া পর্যবেক্ষণ করছে।’ চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন’ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
চীন এবং জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের কাছে যুক্তরাজ্যের তরফে এসব ইস্যু তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি। পারস্পারিক স্বার্থে যুক্তরাজ্য চীনের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক রাখতে চায় উল্লেখ করে ডোমিনিক রাব বলেন, আমাদের দিক থেকে সেই লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাজ্য জোরালো চেষ্টা চালানো হবে এবং সরল বিশ্বাস রাখা হবে। তবে আমরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থের সুরক্ষা দেবো, মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াবো এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার প্রতি চীনকে অনুগত রাখার পক্ষে থাকবো।
এদিকে হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টি। দলটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী লিসা ন্যান্দি বলেছেন, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন যুগে প্রবেশ করবে।
তিনি বলেন, চীনের মানুষের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। তবে হংকংয়ের স্বাধীনতা বিলোপ, দক্ষিণ চীন সমুদ্রে চীন সরকারের পদক্ষেপ এবং উইঘুর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ভয়াবহ আচরণের কারণে আমাদের এখন ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।