একযুগ পরে এমন দীর্ঘমেয়াদি বন্যা


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24


করোনা পরিস্থিতিতির মধ্যেই আঘাত হেনেছে বন্যা। এ যেন এক চিরায়ত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর বন্যায় লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে। সেইসাথে তাদের বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে এসব মানুষ।

ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধা, জামালপুরের বিভিন্ন অঞ্চল। অন্য নদীর পানি বাড়তে থাকলে প্রায় একই সময় প্লাবিত হয় কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় টানা দেশের বিভিন্ন বন্যা বিরাজ করছে। বর্তমানে ১৫টি জেলা বন্যায় প্লাবিত। এবারের দীর্ঘমেয়াদি বন্যার মূল কারণ, বাংলাদেশ ও উজানে ধাপে ধাপে ভারী বৃষ্টিপাত।

একযুগ পরে এমন দীর্ঘমেয়াদি বন্যা

শনিবার (১৮ জুলাই) থেকে আরেক ধাপে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফলে বিদ্যমান বন্যার মাঝেই সাত-আট দিন আরও অবনতির দিকেই থাকবে বন্যা পরিস্থিতি। এমনকি এই বন্যা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ২০০৪ সালের পর দেশে এত দীর্ঘসময় ধরে আর কখনও বন্যা ছিল না।

শনিবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ২০০৪ সালে এ রকম দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হয়েছিল ১৯৯৮ ও ১৯৮৮ সালে। এরপর এত দীর্ঘমেয়াদি বন্যা ছিল না।

এ বিষয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আল রাজি বলেন, এর আগে যে বড় বড় বন্যা হয়েছে, সেগুলোতে আরও দীর্ঘ সময় ধরে বন্যা হয়েছে। যেমন ১৯৯৮ সালের বন্যা। ১৯৯৮ সালের বন্যা বর্তমানের চেয়ে আরও দীর্ঘ সময় ধরে ছিল। তবে বন্যাটা নেমে যাওয়ার পরে সুনির্দিষ্টভাবে এ বিষয়ে বলা যাবে।

চলতি বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার কারণ তুলে ধরে মো. আল রাজি বলেন, এবারের দীর্ঘমেয়াদি বন্যার মূল কারণ হলো মৌসুমি বৃষ্টিপাত। বৃষ্টি বারবার আসছে। আজ থেকে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের আরেকটা ধাপ শুরু হয়েছে। বর্ষার কারণে নদনদীর পানি এমনিতেই বেশি আছে, তার সাথে এই বৃষ্টিপাতের ধাপগুলো বারবার আসার কারণে পানি বিপৎসীমার উপরে থাকছে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের উজান অববাহিকাগুলোয় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এই দীর্ঘমেয়াদি বন্যা।

একযুগ পরে এমন দীর্ঘমেয়াদি বন্যা

তিনি আরও বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৭ জুন বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এটা আট থেকে নয় দিন ছিল। সেটা নেমে যাওয়ার পর আবার শুরু হয়। আজ বৃষ্টিপাতের আরেকটা ফেজ শুরু হয়েছে। তবে নদীর পানি আজ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। কাল পর্যন্ত হয়তো কমবে। এখন যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, এটার কারণে পরশু থেকে হয়তো আবার পানি বাড়া শুরু করবে। তিন-চারদিন বাড়ার পর হয়তো আবার নামা শুরু করবে ধীরে ধীরে। এ হিসেবে ২৪-২৫ জুলাই পর্যন্ত দীর্ঘ সময় নদনদীর পানি বিপৎসীমার উপরেই থাকবে।

‘বন্যা এই মাস পুরোটাই থাকবে। এমনও হতে পারে আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বন্যা থাকতে পারে। এ বছর এরপরও বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে এমন বড় ধরনের বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম’ বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া।

তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে একটু বেশি ক্ষতি হবে। উত্তরাঞ্চলের তুলনায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটু কম ক্ষয়ক্ষতি হবে। মধ্যাঞ্চলের দিকেও কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। সামনের দিনগুলোতে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’