বন্যার পানিতে ডুবে কুড়িগ্রামের উলিপুরে দুই শিশু ও চিলমারীতে এক গ্রাম পুলিশসহ এক দিনে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে জেলার উলিপুর উপজেলা হাতিয়া ও সাহেবের আলগা ইউনিয়নে এবং চিলমারী উপজেলা থানাহাট ইউনিয়নে পৃথকভাবে এ ঘটনা ঘটে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন ও চিলমারী থানার চিলমারী ওসি আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলো উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চর বাগুয়া গ্রামের মোন্তাাজুল ইসলামের শিশু পুত্র বায়েজিদ ইসলাম (৮), একই উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের চর গোড়াইপিয়ার গ্রামের বকুল মিয়ার শিশু কন্যা মুন্নি খাতুন এবং চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত সুরুজ্জামান মিয়া।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপূত্র নদ বেষ্টিত সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চর বাগুয়া গ্রামের মোন্তাজুল ইসলামের শিশু পুত্র বায়েজিদ ইসলাম সবার অগোচরে বাড়িতে ওঠা বন্যার পানিতে পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চিড়াখাওয়ার পাড় এলাকায় নানা বাবু মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে এসে মুন্নি খাতুন নামের দেড় বছরের এক শিশু বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের চর গোড়াইপিয়ার গ্রামের বকুল মিয়ার কন্যা বলে জানা গেছে।
ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, পৃথক ঘটনায় বাড়িতে ওঠা বন্যার পানিতে পরে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পারিবারিকভাবে তাদের দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে চিলমারী উপজেলায় ডোবায় প্রবেশ করা বন্যার পানিতে ডুবে সুরুজ্জামান মিয়া (৫০) নামে এক গ্রাম পুলিশের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের বালাবাড়িহাট কিসামতবানু গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুরুজ্জামান মিয়া থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সুরুজ্জামান মিয়া বাড়ির পাশের ডোবায় বন্যার পানিতে জাগিয়ে রাখা পাট ধুতে যান। হঠাৎ করে তিনি ওই পানিতে তলিয়ে যেতে থাকেন। এসময় তিনি নিকটে ডাঙায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের সহায়তা চাইলে লোকজন তাকে উদ্ধার করার আগেই তিনি পানির ¯স্রোতের তোড়ে তলিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী ও চিলমারী ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা দীর্ঘ দুই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে সুরুজ্জামান মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, নিহত গ্রাম পুলিশের মরদেহ থানাহাট ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ নিয়ে চলমান দ্বিতীয় দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে চার শিশুসহ ছয় জনের মৃত্যু হলো। এর আগে প্রথম দফা বন্যায় বন্যার পানিতে ডুবে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয় বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
পেপার’স লাইফ/চন্দন কুমার সরকার/কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি