পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে জাতিসংঘ সম্মেলনে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছে রাশিয়া। এর আগে ২০১৫ সালেও অংশগ্রহণকারী দেশগুলো মতৈক্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছিল।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সম্মেলনে চুক্তি পর্যালোচনার পর নতুন যে খসড়া বয়ান তৈরি করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়া।
অগাস্টের প্রথমদিন থেকে শুরু হয়ে চার সপ্তাহ ধরে এই সম্মেলন চলার পর একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিনিধি দেশগুলো।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং বলেছেন মতৈক্যে পৌঁছতে এই ব্যর্থতায় তিনি “গভীরভাবে আশাহত। অন্য সব দেশ চুক্তির প্রস্তাবিত বয়ান গ্রহণ করতে রাজি হলেও রাশিয়া আপোষ করতে রাজি না হওয়ায় এ ব্যাপারে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।”
আমেরিকার প্রতিনিধি, রাষ্ট্রদূত বনি জেনকিন্স বলেছেন আমেরিকা “সম্মেলনের এই ফলাফলে গভীরভাবে দুঃখিত, বিশেষ করে যখন রাশিয়ার পদেক্ষেপের কারণেই আমরা এই সম্মেলনে বসেছি।”
সম্মেলনে মতৈক্য না হওয়ায় অনেক দেশ হতাশা প্রকাশ করলেও নেদারল্যান্ডস বলেছে তারা “সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় সন্তুষ্ট, তবে মতৈক্য না হওয়ায় খুবই হতাশ।”
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন চুক্তি নিয়ে মতৈক্য না হলেও এই প্রক্রিয়া “সকলের জন্য নিরাপত্তা মেনে চলার বিষয়টি চর্চ্চার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া এবং এ ব্যাপারে বহুজাতিক দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ।”
ইউক্রেনে যুদ্ধের শুরুতেই রাশিয়া জাপোরিঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটির দখল গ্রহণ করে। এই পারমাণবিক কেন্দ্রসহ দেশটির বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর আশপাশে যে ধরনের সামরিক তৎপরতা চলছে তাতে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করে চুক্তির বয়ানের একটি বিশেষ অংশ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে এই চুক্তি গ্রহণে অসম্মতি জানিয়েছে রাশিয়া।
রুশ প্রতিনিধি ইগর ভিশেনেভেৎস্কি বলেছেন খসড়ার চূড়ান্ত বয়ানে “নিরপেক্ষতা”র অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, “কিছু অনুচ্ছেদ নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি দলের গুরুতর আপত্তি রয়েছে, কারণ সেগুলো খোলাখুলিভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত,”
উল্লেখ্য, জাতিসংঘে নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে।এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং চীন সহ ১৯০ টি দেশ। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত কমাবে এবং অন্যান্য দেশকে পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ হতে দেবে না। তবে এই চুক্তি গৃহীত হবার আগে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব দেশকে চূড়ান্ত দলিলটি অনুমোদন করতে হবে।