তিথি রায় পূজার গল্প “জন্মদিন”


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24, prosenjit bangla movie, jeeter bangla movie, songsar bangla movie, bengali full movie, bengali movies 2019, messi vs ronaldo, lionel messi stats, messi goals, messi net worth, messi height


রাত ১২.০১ !!!

“জন্মান্তরবাদ বলতে যদি সত্যি কিছু থেকে থাকে তবে পরের জন্মে যেনো তুমি আমার প্রতি রাতের সিঁদুরে লেপ্টে যাওয়া বালিশের কারণ হও। শুভ জন্মদিন…..”

মৃদুলা ছোট্ট মেসেজটি পাঠিয়ে দিলো নির্জন কে। নির্জনের সব সম্ভাব্য রিপ্লাই জানে মৃদুলা। তাই বুঝতে পারছে, আজ রাতে মেসেজের জবাব দেবে না নির্জন।

কাল রিপ্লাই করবে ঠিকই, একটা বা দুইটা শব্দ লিখে। হয়তো লিখবে ‘পাগলি/সবসময় পাগলামি’।

অথচ কি আশ্চর্য! নির্জনের এবারের জন্মদিনটা ওদের একসাথে উদযাপন করার কথা ছিলো। সেসব কিছুই বোধহয় মনে নেই ওর। হুট করে একদিন ফোন করে বললো, “আমাদের ফিউচার সুন্দর হবেনা, তাই আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়া দুজনের জন্যই মঙ্গল…..!’

শুধু এই একটা বাক্য আর এতোদিনের প্রেমের ইতি! আজ রাতটা যে পুরো দুটো বছরের স্মৃতিতে হারিয়ে যেতে হবে। সেই স্মৃতিতেই কাটবে আজকের রাতের প্রতিটি প্রহর, মৃদুলা তা ভালোই বুঝতে পারছে।

কিন্তু এমনটা তো হবার কথা ছিলোনা। পৃথিবীর সবকিছু একদিকে আর নির্জন ছিলো আরেক দিকে। এর থেকে বেশি কিকরে কাউকে ভালোবাসা যায় সেটা জানা নেই মৃদুলার। কি করে পারলো নির্জন তার সেই পবিত্র ভালোবাসাকে উপেক্ষা করতে! কি করে পারলো সব কমিটমেন্টস ভুলে যেতে? কি করে পারলো? তবে কি মৃদুলা চিনতে ভুল করেছিলো নির্জনকে?

ফোনের ভাইব্রেশনে মৃদুলার ঘোর কাটলো। বালিশ অর্ধেক টা ভিজিয়ে ফেলেছে এতোক্ষণে। ফোন টা হাতে নিতেই দেখলো নির্জনের মেসেজ। এতো বড় রিপ্লাই মোটেও এক্সপেক্ট করেনি মৃদুলা। চোখ মুছে পড়তে শুরু করলো –

‘হয়তো তুমি কখনো আমাকে বোঝোনি বা হয়তো আমি নিজেই তোমাকে বোঝাতে পারিনি। বা হয়তো প্রকৃতি আমাদের বুঝতে দিতে চায়নি। কিন্তু তুমি যে আমাকে ভুল বুঝছো, কোনো একদিন তুমি ঠিকই রিয়ালাইজ করবে আমি ঠিক ডিসিশন টাই নিয়েছিলাম। আমি জানি তুমি খুব কষ্ট পাচ্ছো, কিন্তু এই মুহূর্তে আমার কি করা উচিৎ বা কি বলা উচিৎ সেটাই বুঝতে পারছিনা। ভালো থাকার চেষ্টা করো। আমি জানি তুমি এখন বলবে যে তোমার ভালো থাকা তো আমিই ছিলাম, কিন্তু কেন সরে গেলাম তোমার থেকে! মৃদুলা কারোর ভালো থাকা কারোর ওপর নির্ভর করেনা বিশ্বাস করো, অনেক বার তোমাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছি এটা। নিজের ওপর সবসময় নিজের কন্ট্রোলিং রাখাটা ভীষণ জরুরী। ভালো থাকতে শিখো আমাকে ছাড়া………..’

মৃদুলার চোখ তখনো জলে ভেজা। কাঁদতে কাঁদতে মৃদুলা লিখলো –

‘তোমার জন্মদিনে আমার এই মুহূর্তের চাওয়া আর যেনো কখনো সেকেন্ড টাইম তোমার মতো মানুষের জন্ম না হয়। আমার মতো একটা মৃদুলার জীবন নরক বানানোর জন্য তোমার মতো একটা নির্জনই যেনো শেষ মানুষ হয় পৃথিবীতে।
আমার এই পুরো একটা জীবন কষ্ট যেনো সুখ হয়ে ধরা দেয় তোমার কাছে। তুমি যেনো এত্ত বেশি সুখে থাকো, যে সেই সুখটাই তোমার কাছে একসময় বিরক্তিকর লাগবে। এখন সত্যিই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কথাটা তোমাকে খুব বলতে ইচ্ছা করছে –
“I want to hate you, because I love you”
কিন্তু তোমার এত্ত ইগনোরেন্সের পরেও আমি তোমাকে হেইট করতে পারিনা। কেন পারিনা নির্জন? কেন আমাকে এত্ত ভালোবাসতে? কেন আমাকে এত্ত ভালোবাসতে শিখিয়েছিলে? আর এত্তকিছুর পর কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে?’

সেদিন সারারাত নির্জন মৃদুলার চ্যাট চলতে থাকলো। কিন্তু কেউ কাউকে একটা বার ও ফোন দিলোনা। কারণ মৃদুলা জানে, ও নির্জন কে এখন একশো বার ফোন দিলেও নির্জন ফোন টা রিসিভ করবেনা। আর নির্জন জানে, মৃদুলার ফোন রিসিভ করলে মেয়েটা কাঁদতেই থাকবে। যেই মেয়েটা কে সে এত্ত বেশি ভালোবাসে কিকরে তার কান্না সহ্য করবে! তাই কথা বলার থেকে বেটার চ্যাট করা।

কিন্তু তারা কেউই জানেনা হয়তো সেদিন রাতেই তাদের শেষ চ্যাট অথবা পরদিন থেকে দুজনের নতুন জীবন শুরুর নতুন অধ্যায়ের সূচনা………..

ভাগ্যিস আমরা কেউ ভবিষ্যত জানতে পারিনা। তাহলে আমাদের বেঁচে থাকাটাই অর্থহীন হয়ে যেতো……….!!!

পেপারস লাইফ/গল্প/তিথি রায় পূজা

পড়ুন : তিথি রায় পূজার গল্প “প্রথম দেখার গল্প”

তিথি রায় পূজার গল্প “খুনসুটি”