প্রতিদিন সন্ধা ৭ টায় সাইরেন বাজলে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে সাংলি জেলার ভাদগাও গ্রামের গ্রামবাসীরা বুঝতে পারেন সময় হয়েছে টেলিভিশন আর মোবাইলের সুইচ বন্ধ করে দেওয়ার। রাত সাড়ে ৮টায় ফের সাইরেন বাজলে ফের চালু করেন মোবাইল ও টিভি।
আধুনিক সভ্যতায় পৃথিবীর পাশে থাকা মানুষটির সঙ্গে বাড়তে থাকা দূরত্ব ঘোচাতে দিনের নির্দিষ্ট সময় টেলিভিশন আর মোবাইল ইন্টারনেটকে দৈনন্দিন জীবন থেকে দূরে রাখার পথ বেছে নিয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের এই গ্রামটি।
এ বিষয়ে গ্রাম সভার প্রধান ভিজয় মোহিতে বলেন, ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগের সন্ধায় আমরা গ্রাম সভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই আসক্তি বন্ধ করতে হবে আমাদের। পরের দিন থেকেই সাইরেন বাজানো হলেই টেলিভিশন সেট এবং মোবাইল বন্ধ রাখা হচ্ছে। গ্রামের শিশুরা টেলিভিশন এবং মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল মহামারীর সময়ে। কিন্তু, এ বছরে স্কুল খোলার পর শিশুরা স্কুলে ফিরলেও তাদের টিভি আর মোবাইল ফোন আসক্তি এখনও কাটেনি। ওরা স্কুল থেকে ফিরে হয় মোবাইল ফোনে গেইম খেলতে লেগে যায়, না হয় টেলিভিশন দেখতে বসে যায়।
আরও পড়ুনঃ ‘সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী’ সংগঠন ফেসবুক!
অবশ্য গ্রামের সবাইকে এই ডিজিটাল ডিটক্স-এ রাজি করানো সহজ ছিল না বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। গ্রাম সভায় বিষয়টি আলোচনার পর গ্রামের বাসীন্দাদের সামনে প্রস্তাব তোলার পর বিষয়টি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই।
নিরুপায় হয়ে গ্রামের নারীদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন গ্রাম সভার মুরুব্বীরা; টিভি সিরিয়াল দেখতে বসে যে দৈনন্দিন জীবনের খেই হারিয়ে ফেলছেন, সেই স্বীকারোক্তি দেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন গ্রামটির নারীরাই। তারাই প্রথমে রাজি হয়েছিলেন প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য টেলিভিশন আর মোবাইল ফোন বন্ধ রাখার প্রস্তাবে। এরপর গ্রাম সভার পরের বৈঠকে গ্রামের মন্দিরের ওপর সাইরেন বসানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা।