এবারের বন্যায় ১৩ বছরের মধ্যে পদ্মায় সর্বোচ্চ পানি বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। জানা গেছে, পদ্মার পানি শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে রংপুর অঞ্চলে উপরে উঠে ফের বিপদসীমার নিচে নেমেছে তিস্তার পানি। আর সিলেট অঞ্চলে সুরমার পানি আবারও বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।
পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শরীয়তপুরের ছয় উপজেলার প্রায় ৪০ ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব এলাকায় দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি এবং পশু খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া এই দুই উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী প্রধান তিনটি সড়কের একাধিক স্থান পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি, নাওডোবা, কু-েরচর, পালেরচর, বিলাসপুর এবং নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, কাঁচিকাটা, মোক্তাকারের চর, নশাসন ও রাজনগর ইউনিয়নের বেশিরভাগ বাড়িতেই পানি উঠেছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
এ দিকে পানি বৃদ্ধির ফলে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের ৪টি স্থান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সড়কের আরও ১৫টি স্থানে পানি প্রবেশ করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শিবচরের বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ভাঙতে ভাঙতে নদী আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে চলে আসায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আশ্রিতদের, তাদের মালামাল ও গবাদিপশু। এখনো পানিবন্দি রয়েছে হাজার হাজার পরিবার।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শিবচরের পদ্মায় পানি বেড়েছে ৫ সে.মি. ও আড়িয়াল খাঁয় বেড়েছে ৬ সে.মি. পানি। পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোত অব্যাহত থেকে নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে শিবচরের সাত ইউনিয়নে। পদ্মা তীরবর্তী উপজেলার বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও চরজানাজাতে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম বেপারি বলেন, পদ্মা নদী আগ্রাসী রূপ ধারণ করায় দুটি স্কুল ও ইউনিয়ন পরিষদ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।