ক্রিকেটকে বলা হয় রেকর্ডের খেলা। প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহূর্তে, প্রতি বলেই কিছু না কিছু ঘটে। তৈরি হয় নতুন নতুন সব রেকর্ডের। সেসব রেকর্ড ভাঙাও যায় পরবর্তী খেলোয়াড়দের মাধ্যমে। তবে এমন কিছু কীর্তি ঠাঁই করে নিয়েছে ক্রিকেটের রেকর্ড বুকে যা আজও অক্ষত। সেসব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ে তোলা কতটুকু সম্ভব হবে, আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে চলে আলোচনা গবেষণা।
আজ তেমনই কিছু রেকর্ড তুলে ধরা হচ্ছে:
১. ব্র্যাডম্যানের গড়: ক্রিকেটে একজন ক্রিকেটারের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ, সে কতটা ধারাবাহিক তা বিচার করার জন্য তার ব্যাটিং গড় খুব বেশি মূল্যবান। ব্যাটিং গড় যত বেশি হবে সে ততবেশি ধারাবাহিক। এই দিক দিয়ে সব থেকে এগিয়ে আছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। টেস্ট ক্রিকেটে তার ব্যাটিং গড় ৯৯.৯৪, যার ধারেকাছে কেউ এখন পর্যন্ত আসতে পারে নি। ৫২ টেস্টে ৮০ ইনিংসে তিনি এই গড় স্থাপন করেন। যেখানে তার অর্ধশতক আছে মাত্র ১৩ টি তবে সেঞ্চুরি আছে ২৯ টি। মোট রান করেন ৬৯৯৬, সর্বোচ্চ ৩৩৪।
২. মুরালির উইকেট: কে সর্বকালের সেরা স্পিনার? প্রশ্নটা উঠলেই অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন ও শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন নিয়ে বিতর্ক চলে আসে। তবে এসবের ঊর্ধে যেন শ্রীলঙ্কার অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৩৪ উইকেট মোট ১৩৩৪ উইকেট নিয়ে সবার শীর্ষে তিনি। কতটুকু সেরাতা দিলে এই রেকর্ড ভাঙা সম্ভব তা এখনো বিশ্লেষণের পর্যায়েই আছে।
৩. শচীনের শতক: শচীন রমেশ টেন্ডুলকার – ভারতের ক্রিকেটের গডফাদার বলা হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করার রেকর্ড তার। টেস্টে তিনি ৫১ টি ও ওডিআই তে ৪৯ টি শতক হাঁকান। তার শততম শতকটি আসে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
৪. গ্রাহাম গুচের একটেস্টের রান: এক টেস্টে দুই ইনিংসে একজন ব্যাটসম্যান কত রান করে তা হয়ত অনেকেরই অজানা। ১৯৯০ সালে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে তার সর্বমোট রান ৪৫৬। প্রথম ইনিংসে ৩৩৩ রানের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১২৩ রান।
৫. জ্যাক হবসের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট: ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জ্যাক হবস প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেন ৮৩৪ টি। যেখানে তার রান ৬১৭৬০। যা যেকোনো ক্রিকেটার জন্য ভাঙা অসম্ভব প্রায়। তার এই ক্যারিয়ারে তিনি সেঞ্চুরি করেন ১৯৯ টি। রেকর্ডবুকে যা ভাঙা সম্ভব হবে কিনা তা আজও অজনা।
৬. দ্রাবিড়ের ক্যাচ: ১৬৪ টেস্ট খেলা রাহুল দ্রাবিড় ক্যাচ ধরেন ২১০ টি। একজন উইকেটরক্ষকের যা আজও সম্ভব। ক্রিকেটে এই নিরাপদতম হাত ম্যাচ প্রতি ক্যাচ ধরে ০.৬৯৭ গড়ে
৭. পন্টিংয়ের টেস্ট জয়: একজন ক্রিকেটারের যেখানে স্বপ্ন ১০০টি টেস্ট খেলা সেখানে রিকি পন্টিং ক্রিকেটার হিসেবে ১০৮ টি টেস্টে জয়ের স্বাদ পেয়েছে
৮. গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্ব: অধিনায়ক হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে ১০৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন গ্রায়েম স্মিথ। যা আর কোনো অধিনায়ক করতে পারেননি। মাত্র আট টেস্ট খেলার পর থেকেই দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্রিকেটার তিনি।
৯. জিম লেকারের একটেস্টের উইকেট: এক টেস্টে দুই ইনিংসে মোট ২০ উইকেট থাকে। ইংল্যান্ডের অফস্পিনার এক টেস্টে নিয়েছিলেন ১৯টি উইকেট। ১৯৫৬ সালে ম্যানচেস্টার টেস্টে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৯টি আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ টি উইকেট পান।
১০. অধিনায়ক ধোনি: একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ভারত সবধরনের আইসিসি ইভেন্ট (ক্রিকেট বিশ্বকাপ, টি২০ বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) জয়লাভ করে। তার নেতৃত্বেই ভারত টেস্ট র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান লাভ করে। যা আর কোনো অধিনায়ক করতে পারেন নি।
১১. লারার ৪০০: ২০০৪ সালের ১২ই এপ্রিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে ৪০০ রান করার কীর্তি গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিজেন্ড ব্রায়ান লারা। যা এখন পর্যন্ত অক্ষত অবস্থায় আছে।