শিনজো আবের শেষকৃত্য; যেভাবে আড়াই মাস সংরক্ষিত ছিলো মরদেহ


শিনজো আবে


জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হলো ২৭ সেপ্টেম্বর। ৮ জুলাই আততায়ীর গুলিতে নিহত হন তিনি।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শেষকৃত্যের ব্যয় ১৬৬ কোটি ইয়েন নির্ধারণ করা হয়। যা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের চেয়েও অনেক বেশি। পুরো অনুষ্ঠানটি হয় রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে।

শেষকৃত্যে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্তত ৭০০ বেশি বিদেশি অতিথি অংশ নিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশটির স্থানীয় সময় দুপুর ২ টায় দেশটির সামরিক বাহিনীর অনার গার্ড আবেকে স্যালুট জানাতে কামান থেকে ৯টি ফাঁকা গোলা ছোড়ার মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে প্রায় এক হাজার সেনা সদস্য।

টোকিওর কেন্দ্রস্থলে নিপ্পন বুদোকানে আবের শেষকৃত্যে অন্তত ৪ হাজার ৩০০ অতিথি অংশ নেন।

যেভাবে সংরক্ষণ করা হলো শিনজো আবের মরদেহ:

মরদেহ সংরক্ষণের কথা উঠলেই মিশরের মমির কথা সবার আগে মাথায় আসে। হাজার হাজার বছর ধরে কী ভাবে প্রাচীন মিশরের ফারাওদের দেহ সংরক্ষণ করা হত, তা আজও বিস্ময়।

আবের ক্ষেত্রে কোন পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুর পর দেহকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করার বিশেষ কিছু পদ্ধতি রয়েছে।

পূর্বে স্থানভেদে আলাদা আলাদা পদ্ধতি মরদেহ সংরক্ষণ করা হতো। যেমন- ভিনিগার বা অন্যান্য মদে চুবিয়ে মরদেহ সংরক্ষণের কথাও শোনা যায়। উদাহরণসরূপ:

মিশরে মরদেহে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মাখিয়ে তার উপর কাপড় পেঁচিয়ে দেওয়া হত।

আরও পড়ুন: আফ্রিকার দুর্ভিক্ষ; পোকা-মাকড় চাষের পরামর্শ ব্রিটিশ সংস্থার

শোনা যায়, আলেকজান্ডারের দেহ ব্যাবিলন থেকে ম্যাসিডোনিয়া আনা হয়েছিল মধুর পাত্রে নিমজ্জিত করে।

ট্রফলগারের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ব্রিটিশ অ্যাডমিরাল লর্ড নেলসনের দেহ নাকি ইংল্যান্ডে আনা হয়েছিল ব্র্যান্ডির পাত্রে।

বিজ্ঞানের ভাষায় বিষয়টিকে বলে ‘এমবামিং’। এ ভাবে মৃতদেহ সংরক্ষণ কিন্তু আগেও হয়েছে। রুশ রাষ্ট্রনায়ক লেনিনের মৃতদেহ আজও সংরক্ষিত রয়েছে মস্কোতে।

এমবামিং আসলে কি?

সতেরো-আঠেরো শতকে ইংল্যান্ডে এই পদ্ধতির সূচনা। তবে আধুনিক এমবামিংয়ে ধমনীর মধ্যে দিয়ে দেহ সংরক্ষণকারী তরল প্রবেশ করানো হয় মরদেহে।

সাধারণত মরদেহ সংরক্ষণ করতে হলে আগে শিরা থেকে রক্ত বার করে নেওয়া হয়। বদলে প্রবেশ করানো হয় ফর্ম্যালিন বা ফরম্যালডিহাইড জাতীয় তরল। দেহগহ্বরের ভিতরে থাকা তরল ‘ট্রোকার’ নামক একটি লম্বা সুচ দিয়ে টেনে বার করে নেওয়া হয়। এরপর ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ফরম্যালডিহাইড, অ্যালকোহল ও ইমালসিফায়ার জাতীয় পদার্থের মিশ্রণ। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিকগুলো কিছু দিন পর পর বদলাতে ফেলতে হয়।