ব্যতিক্রমভাবে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন সাদিয়া আক্তার রত্না। ২০০৮ শখের বসে শুরু করে আজ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় রত্নার পাঁঠার খামার।
তৃতীয় লিঙ্গের সাদিয়া আক্তার রত্নার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়ায়। স্বাবলম্বী হতে নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন পাঁঠার খামার। বর্তমানে আশপাশের জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় পাঁঠার খামারটি তার।
পাঁঠার খামারের মালিক রত্না জানান, আমি তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্বীকৃতি দিলেও আমাদের জনগোষ্ঠীর সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়নি। মানুষের কাছে হাত পেতে খাওয়া ভালো কাজ না। তাই আমি নিজ উদ্যোগে একটি পাঁঠার খামার গড়ে তুলেছি।
তিনি বলেন, আজও আমাদের দেখে মানুষ উপহাস করে। খামার নিয়ে অনেকেই আজেবাজে মন্তব্য করেন। এমপির কাছে অভিযোগ করেছেন অনেকে, তারপরও আমি থেমে থাকিনি।
আরও পড়ুন : বৃহস্পতি ও পৃথিবীর মাঝে আজ ঘটতে চলেছে যে বিরল ঘটনা!
এলাকায় রত্না গুরুমা হিসেবে পরিচিত। শখের বসে ২০০৮ সালে রাজশাহী থেকে ১ লাখ টাকায় দুটি পাঁঠার বাচ্চা কেনেন তিনি। চট্টগ্রামে পাঁঠার হাটে ঘুরতে গিয়ে তার মাথায় আসে খামারের চিন্তা। বাড়িতে ফিরে শুরু করেন দুটি শেড তৈরির কাজ।
রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর থেকে হরিয়ানা, তুতাপুরী, রাজস্থানি, নেপালি ও ভুটানি জাতের ৫৬টি পাঠা দিয়ে গড়ে তোলেন স্বপ্নের খামার।
রত্নার পাঁঠার খামার বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় মোট ১১৪টি পাঁঠা রয়েছে।
যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। তার খামারে কাজ করেন ৮-১০ জন। প্রতিদিন কাঁঠালের পাতা, ছোলা, ভুসি, বিটলবন, বিচুলি কুচি ও আখের গুড় মিশ্রিত পানি খাওয়ানো হয় পাঁঠাগুলোকে।
রত্নার পাঁঠার খামারের কর্মচারী তৃতীয় লিঙ্গের কাজল জানান, তৃতীয় লিঙ্গের অনেকে পাঁঠা দেখাশোনার জন্য কাজ করে। প্রতিদিন সকালে গোয়ালটা সুন্দরভাবে পরিষ্কার করার পর পাঁঠাদের কাঁঠালের পাতা খাওয়ানো হয়। ১২টার দিকে আখের গুড় দিয়ে পানি খাওয়ানো হয়। দুপুরে গোসল করানোর পর ২টার দিকে ভুসি ও বিচুলি খেতে দেওয়া হয়। রাতে দেয়া হয় কাঁঠাল পাতা ও ছোলা।
পাঁঠাগুলো গড়ে এক থেকে দেড় বছর লালন-পালন করে শ্রাবণ মাসের ২০ তারিখ বিক্রি জন্য চট্টগ্রামের আকবর খানের হাটে তোলা হয় বলে জানান তিনি।