চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল সোমবার (৮ জুন) রাতে বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের পাশাপাশি আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও কমতে পারে। এটি আরো কমে ১ শতাংশে আসতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে করা প্রক্ষেপণ থেকে চলতি অর্থ বছরের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমবে বলে ধারণা তাদের।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদেনর তথ্যমতে, ২০২০ সালে বৈশ্বিক জিডিপিতে ৫ দশমিক ২ শতাংশ সংকোচনের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের আর্থিক ও আর্থিক নীতি সমর্থন দেওয়া ছাড়াও মন্দাকে মোকাবেলায় অসাধারণ প্রচেষ্টা করছে বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ। তারপরেও প্রতিটি অঞ্চলেই প্রবৃদ্ধিও যথেষ্ট পরিমাণে নিম্নগতি থাকবে। এর মধ্যে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি সামান্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তবে দক্ষিণ এশিয়া ২ দশমিক ৭ শতাংশ, সাব-সাহারান আফ্রিকাতে ২ দশমিক ৮ শতাংশ, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা ৪ দশমিক ২ শতাংশ, ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া ৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং লাতিন আমেরিকা ২ দশমিক ২ শতাংশ কমতে পারে। চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় লাখ লাখ লোককে চরম দারিদ্র্যের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার কারণে বাণিজ্য ও পর্যটন হ্রাস, রেমিট্যান্স হ্রাস, মূলধন প্রবাহ কমে যাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান ঋণ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা আরো বাড়বে। করোনার কারণে শিল্পপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এটি আবার রফতানিকে কমিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া করোনায় প্রবাসী আয়েও পতন হয়েছে। এ ছাড়া দেশের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা নয়; শিল্প খাতের মধ্যবর্তী পণ্য আনা-নেওয়াকেও ব্যাহত করেছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট লকডাউনে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের মতো দেশে ব্যক্তিপর্যায়ের ভোগ ব্যাপকভাবে কমেছে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলছে, এসব দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলো হলো বেসরকারি খাতের প্রাণ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাপক পরিমাণ কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ হারিয়েছে। পল্লী এলাকায় খাবার ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহও বিঘ্নিত হয়েছে। সম্প্রতি লকডাউন শিথিল করায় এসব দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।