একটা সময় ছিল যখন ঘনিষ্ট দৃশ্য বোঝাতে দুটো রঙিন ফুলের ঠোকাঠুকি বা দুটি প্রজাপতির ওড়া বোঝানো হতো। তবে কয়েক দশকে এ চিত্র অনেকটাই পাল্টেছে। কিন্তু করোনা যেন সব হিসেব উলটে দিচ্ছে। করোনার কারণে লকডাউনের পর ফের শুটিগ শুরু করতে প্রযোজকদের সংগঠন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য ‘ব্যাক টু অ্যাকশন’ নামে ৩৭ পৃষ্ঠার একটি দীর্ঘ নীতিমালা প্রকাশ করে। সেই নীতিমালায় একবার চোখ বোলালে আপনার মনে হতেই পারে, বলিউড আবারও প্রেম, যুগলের ঘনিষ্ঠ হওয়া দেখাতে দুটো রঙিন ফুলের ঠোকাঠুকিতে ফিরে যাবে।
নীতিমালায় ‘চুমু খাওয়া, জড়িয়ে ধরা বা যৌনদৃশ্য বাদ’ বলে আলাদা একটা অধ্যায়ই আছে। আর এ অধ্যায় নিয়েই বিদ্রোহ করে বসেছেন একাধিক পরিচালক।
এ বিষয়ে পরিচালক গৌরব পাঞ্জওয়ানি তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেছেন, ‘এই বিধিনিষেধ মেনে তো কাজ করাই কঠিন। তাই যত দিন এসব নীতিমালা কার্যকর, তত দিন অন্তত আমি বা আমার মতো স্বাধীনচেতা পরিচালকদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। চিত্রনাট্য যদি চুমু বা অন্তরঙ্গ দৃশ্য দাবি করে, ফুল, পাখি দেখিয়ে আমি কাজ চালাতে পারব না। সবকিছু সত্যি সত্যিই স্বাভাবিক হোক আগে। তারপর “অ্যাকশন” হবে।’
‘রুদ্রাক্ষ’, ‘নকআউট’খ্যাত নির্মাতা মণি শংকরেরও বলছেন, ‘চুমু, জড়িয়ে ধরা, শারীরিকভাবে অন্তরঙ্গ হওয়া এগুলো তো আকাশ থেকে টুপ করে পড়েনি। এগুলো জীবনের সঙ্গে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে লেগে আছে। নীতিমালা আমাদের সিনেমা বানাতে বলছে, জীবনের উপাদান বাদ দিয়ে। শিল্পীরা যদি করোনায় আক্রান্ত না হন, তবে এসব দৃশ্য করতে সমস্যাটা কোথায়? নীতিমালা মেনে এখন স্ক্রিপ্ট লিখতে বসতে হবে? নায়ক–নায়িকা প্রেম করবে, চুমু খাবে না! স্বামী–স্ত্রী সংসার করবে, শুধু একসঙ্গে বিছানায় যাবে না!’
অবশ্য অনেকেই বলছেন এই নীতিমালা খুব বেশি দিনের জন্য নয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার উঠে যাবে এই নীতিমালা।