প্রথম লেগে হেরেছিল দুটি দলই। অলিম্পিক লিও’র কাছে প্রথম লেগে ১-০ গোলে পরাজিত হয় জুভেন্টাস। অন্যদিকে ১-২ গোলে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তাই দুই দলের জন্যই জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। জুভেন্টাস জিতেছে, হেরেছে মাদ্রিদ। সহজ সমীকরণে মাদ্রিদের বিদায় হলেই জয় পেয়েও এওয়ে গোলের হতাশায় পুড়ে বিদায় নিতে হয়েছে রোনালদোর দলকে। ফলে একই দিনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বর্তমান ও সাবেক ক্লাব বিদায় নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে।
ম্যানচেস্টার সিটির সামনে সমীকরণ ছিল সহজ। দুই গোলের কম ব্যবধানে হারলেই নিশ্চিত হতো কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট। তবু ঝুঁকি নিতে চায়নি যেনো পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। নিজেদের ঘরের মাঠে রিয়ালকে ২-১ গোলে হারিয়েই পেয়েছে শেষ আটের নিশ্চয়তা।
শুক্রবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফেরার উপলক্ষ্যটা রাঙিয়ে নিতে মাত্র ৯ মিনিট সময় খরচ করে ম্যান সিটি। তবে একপ্রকার উপহারই পেয়েছে তারা। রাফায়েল ভারানের ঢিলেমির সুযোগে বল কেড়ে নেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস। তার কাছ থেকে পাস পেয়ে অনায়াসেই থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন রহিম স্টার্লিং।
চলতি মৌসুমে দারুণ খেলতে থাকা স্টার্লিংয়ের এটি ম্যান সিটির হয়ে শততম গোল। মিনিট দশেক পর গোলের টালিটা আরও বাড়াতে পারতেন তিনি। এবারও গোলরক্ষককে ফাঁকা পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাসেমিরোর দুর্দান্ত স্লাইডিং ট্যাকলে সে দফায় গোলবঞ্চিত হয় ম্যান সিটি ও স্টার্লিং।
দুই লেগ মিলে তখন ১-৩ গোলে পিছিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। পরের পর্বে যেতে হলে করতে হবে অন্তত আরও ৩ গোল। তাদের আশা দেখান করিম বেনজেমা। ম্যাচের ২৮ মিনিটের সময় রদ্রিগোর ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে ম্যাচে সমতা ফেরান এ ফ্রেঞ্চ তারকা ফরোয়ার্ড।
৬৮ মিনিটের সময় স্কোরশিটে নাম তোলেন প্রথম গোলের যোগানদাতা গ্যাব্রিয়েল হেসুস। এবারও ভারানের ভুল। দুইবার সুযোগ পেয়েও বল ক্লিয়ার করতে পারেননি এ ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার। সুযোগ পেয়ে বল দখলে নিয়েই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ হেসুস। বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের।
অন্যদিকে, একই সময়ে শুরু হওয়া দিনের অন্য ম্যাচে লিওর বিপক্ষেও সমান ২-১ ব্যবধানে জিতেছে জুভেন্টাসও। কিন্তু প্রথম লেগে তারা হেরেছিল ০-১ ব্যবধানে। ফলে দুই লেগ মিলে হয় ২-২ ড্র। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে এক গোল করায় শেষ আটের টিকিট পায় ফ্রেঞ্চ ক্লাব লিও।
প্রথম লেগের ম্যাচটি অলিম্পিক লিওর মাঠ থেকে ০-১ গোলে হেরে এসেছিল জুভেন্টাস। তবু দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ ঘরের মাঠে হওয়ায় আশা ছিল সামলে নেয়ার। তা নেয়াও গেছে, কিন্তু ঘরের মাঠে এক গোল হজম করে ফেলায়ই বাঁধল বিপত্তি।
শুক্রবার রাতের ম্যাচে প্রথম গোল করেছে লিওই। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ তৈরি করলেও, গোল পায় ১২ মিনিটের সময়। রদ্রিগো বেন্টাঙ্কুর ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ভিএআরেও বহাল থাকে এই সিদ্ধান্ত। সফল স্পটকিকে দলকে এগিয়ে দেন মেম্ফিস ডিপে।
জুভেন্টাসের সমতাসূচক গোলটিও আসে পেনাল্টি থেকে। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার মিনিট দুয়েক আগে মিরালেম পিয়ানিচের ফ্রি-কিকে আসা বল ডিপের হাতে লাগলে পেনাল্টি দেন রেফারি।
সহজ সুযোগ থেকে গোল করতে কোনো ভুল করেননি দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে দলকে এগিয়ে দেয়া গোলটিও করেন রোনালদো।
এ দুই দলের জয়ের ফলে সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে আগামী ১৫ আগস্ট দিবাগত রাতে সিটিজেনদের প্রতিপক্ষ ফ্রেঞ্চ ক্লাব অলিম্পিক লিও।