করোনার কারণে একদিকে পশমের চাহিদা কমে গেছে, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে মিংকের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে লাখ লাখ মিংক মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেদারল্যান্ড ও স্পেন। প্রচুর মিংক করোনা সংক্রমিত বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউরোপের পশম ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন স্পেন ১০ লাখ মিংক মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে নেদারল্যান্ডেও ১০ লাখেরও বেশি বেজি জাতীয় এই প্রাণী মেরে ফেলা হয়।
বেজি জাতীয় এই প্রাণী বা মিংকের চামড়া পশম শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এর চাহিদাও প্রচুর। কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে এখন কোনো চাহিদাই নেই। বন্ধ হয়ে রয়েছে অনেক ফার্ম। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন কাজ না হওয়ায় ফার্মগুলোতে মিংকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন সেই অস্বাভাবিক হারে বেড়়ে চলা মিংক নিয়ন্ত্রণ করতে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফার্মগুলো।
এমনটাও জানা গেছে, যে অনেক ফার্মে মিঙ্ক করোনাভাইরাসেও সংক্রমিত হচ্ছে। সেই ঝুঁকির কারণেও একসঙ্গে এত প্রাণীকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্পেনের উত্তর-পূর্ব আরাগন অঞ্চলের কৃষিমন্ত্রী হোয়াকিন ওলোনা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, মেরে ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় আপাতত দেখা যাচ্ছে না। অনেক ফার্মের শ্রমিক প্রথমে করোনা আক্রান্ত হন। এর পরে তাদের মাধ্যমেই ফার্মের পশুদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ে বলে আশঙ্কা।
তবে এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত নয় প্রশাসন।
ওলোনা বলেছেন, ‘মানুষের দেহ থেকে মিঙ্কদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে নাকি উল্টোটা হয়েছে, তা নিয়ে এখনো আমরা নিশ্চিত নই।’
জানা গেছে, নেদারল্যান্ডের কমপক্ষে ২৫টি মিংক ফার্মে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে কর্মীদের মধ্যে। যত দিন যাচ্ছে তত ছড়াচ্ছে। কর্মীদের পাশাপাশি অনেক প্রাণীও সংক্রমিত। এই পরিস্থিতিতে সংক্রামিত হয়নি এমন কিছু সংখ্যক মিঙ্ক-ছানা অন্য কোনো নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
কিভাবে ফার্মগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে তা নিয়ে গবেষণাও শুরু হয়েছে। গবেষকরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন এপ্রিলের শেষ দিকে ফার্মের দু’জন শ্রমিক প্রথমে আক্রান্ত হন। আর তাদের থেকেই পশুদের শরীরে রোগ ছড়ায়।
উল্লেখ্য, পশম উৎপাদনে প্রথম সারিতে থাকা দেশগুলির মধ্যে রয়েছে চীন, ডেনমার্ক এবং পোল্যান্ড। এর পরে নেদারল্যান্ডেই সবচেয়ে বেশি পশম প্রস্তুত হয়। এরই মধ্যে ডেনমার্কের তিনটি মিঙ্ক ফার্মের খবর মিলেছে যেখানে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। স্পেনেও প্রচুর পশম উৎপাদন হয়। তাই চিন্তায় আছে স্পেনও। দেশের সর্বত্র তাই ফার্মগুলোর উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষে।