নাটকীয়তায় মা হলেন করোনাক্রান্ত নারী, চিকিৎসক দল কোয়ারেন্টাইনে


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24, prosenjit bangla movie, jeeter bangla movie, songsar bangla movie, bengali full movie, bengali movies 2019, messi vs ronaldo, lionel messi stats, messi goals, messi net worth, messi height


যশোরের চৌগাছার করোনা আক্রান্ত নারী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রথম নারী, যিনি করোনা শনাক্ত অবস্থায় সন্তান জন্ম দিলেন।

করোনা আক্রান্ত ওই নারীর সিজারের নির্ধারিত দিন ছিল গত ৯ মে। কিন্তু অনেক ‘নাটকীয়তা’ শেষে বুধবার (১৩ মে) দুপুরে সিজার করা হয় যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৯ মে ওই নারীর শরীর থেকে চার বার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তার প্রথম রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। এর পরের দুইবার নেগেটিভ রেজাল্ট এলেও শেষবার আবার পজিটিভ ফল আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর শহরের শহিদ মসিয়ূর রহমান সড়কে জেনেসিস প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ওই নারী নিজের দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

ডা. নিলুফার ইয়াসমিন এমিলি সিজারিয়ান অপারেশনে নেতৃত্ব দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তো সবসময়ই সিজার করি। কিন্তু প্রসূতি করোনা পজিটিভ হওয়ায় একটু ভয় লেগেছে। তবে কোনো সমস্যা হয়নি। মা ও বাচ্চা দুজনেই সুস্থ আছে।

উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্ত ওই নারী গত ২৫ এপ্রিল করোনা শনাক্তের পর নিজ বাড়িতেই তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। গত ৯ মে বিকেলে ওই নারীকে করোনামুক্তির ছাড়পত্র ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘করোনামুক্ত’ ঘোষণা করেছিলেন সিভিল সার্জন। সেদিনই ডেলিভারি ডেট থাকায় সন্ধ্যায় ওই নারীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেন চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসকরা আবারো তার করোনা উপসর্গ আছে বলে সন্দেহ পোষণ করেন। গত সোমবার তার শরীরের নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় আবারো তার করোনা পজিটিভ আসে।

এরপর যশোর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় গঠিত বিশেষ প্রসূতি টিমের তত্ত্বাবধানে বিশেষ ব্যবস্থায় সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আজ বুধবার দুপুরে শহরের জেনেসিস প্রাইভেট হাসপাতালে তার সিজার সম্পন্ন হয়।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল ২৮ বছর বয়সী ওই নারী চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন। তার করোনা উপসর্গ থাকায় ২৩ এপ্রিল নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। নমুনা নেয়ার পরই তিনি হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ২৪ এপ্রিলের পরীক্ষায় তার ফল পজিটিভ আসে। ২৫ এপ্রিল সকালে রিপোর্ট এসে পৌঁছালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই নারীর বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়। সেখানে তার স্বামী ও আট বছর বয়সী মেয়ের নমুনা নেয়া হয় এবং ওই বাড়িটি লকডাউন করা হয়। পরীক্ষায় তার স্বামী ও সন্তানের নমুনা নেগেটিভ ফল দেয়। ২৮ এপ্রিল ওই নারীর সংস্পর্শে আসা চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন নার্সের নমুনা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে করা পরীক্ষায় পজিটিভ হয়।ডেলিভারি ডেট ৯ মে হওয়ায় ৪ মে ফের তার নমুনা নিয়ে যবিপ্রবি পরীক্ষাগারে পাঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এইদিনের পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। ৫ মে আবার তার নমুনা নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ৮ মে পাঠানো পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ হয়। এরপর ৯ মে তাকে করোনামুক্তির ছাড়পত্র দেয়া হয়।

চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরপর দুবার তার করোনা পরীক্ষা নেগেটিভ আসায় তাকে করোনামুক্তির ছাড়পত্র দিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর পরীক্ষায় আবারো করোনা পজিটিভ হন তিনি। পজিটিভ অবস্থায়ই বুধবার তার সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন হয়। ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘প্রসূতি ও বাচ্চা উভয়েই সুস্থ আছে।’

ওই নারীর স্বামী জানান, আমি সিজার অপারেশন করা ডাক্তারসহ সকল ডাক্তারদের কাছে কৃতজ্ঞ।

জানা গেছে, ওই নারীর যে টিম সিজার করেছে, সেই টিমের প্রত্যেককে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যদি এর মধ্যে অন্য কোন প্রসূতির সিজার করা লাগে, তাহলে এই ডাক্তার তার টিম নিয়ে সিজার করবেন।