করোনাভাইরাসের ক্রান্তিলগ্নে খেলা বন্ধ। তাই খেলোয়াড়দের মাঠে নামা হচ্ছে না দীর্ঘদিন। এমন পরিস্থিতিতে অনেক খেলোয়াড়ই লাইভ এ আসছেন, আড্ডা দিচ্ছেন।
শনিবার রাতে ইন্সটাগ্রাম লাইভে এসেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের দুই তারকা মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। সেখানে নিজেদের খেলোয়াড়ি জীবনের অনেক বিশেষ ঘটনা নিয়েই আড্ডায় মেতে।ছিলেন দুজন।
প্রায় এক ঘণ্টার লাইভ সেশনে অনেক প্রসঙ্গেই কথা বলেছেন বর্তমান অধিনায়ক ও সাবেক অধিনায়ক। সবগুলোই বন্ধুস্থানীয় পর্যায়ের আড্ডা, যেখানে ছিল না কোন প্রথা মানার আদিখ্যেতা। নিজেদের মতো প্রাণ খুলে কথা বলেছেন এ দুজন।
কথার এক ফাঁকে মাশরাফি বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বলি তোর এই পর্যন্ত আসার পেছনে তোর বড় ভাইয়ের (নাফিস ইকবাল) অবদান সবচেয়ে বেশি। তোর ভাই তোদের জন্য যে ত্যাগগুলো করেছে তা অবিশ্বাস্য। তোর বাবা অসাধারণ একজন মানুষ ছিল, মারা গেলেন। তোর মা তোর বোনকে নিয়ে সংসার সামলেছেন। তোর চাচারা ছিল কিন্তু যে যাই বলুক আমি বলবো তোর বড় ভাইয়ের অবদান অনেক বেশি।’
মাশরাফির কথার ফাঁকে তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ! ভাইয়ার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। আপনি তো আমাকে আগেও বলেছেন, ভাইয়া যে না খেয়ে টাকা জমাতেন।’
খানিক আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মাশরাফি। বলতে থাকেন, ‘তোর ভাই যা করছে তুই জানিস না। আমরা জানি, আমরা তার সাথে চলছি। ওয়ান ফ্রেঞ্চ বার্গার খাইতোরে ভাই, ওয়ান ফ্রেঞ্চ বার্গার। আমি ওরে একদিন বলছিলাম যে তুই যদি শরীরেই না দিস, তুই বাঁচবি কিভাবে আর খেলবি কিভাবে। এগুলো তো মজার কাহিনী, আফতাব ছিল।’
তবে মাশরাফি পরে বুঝতে পেরেছেন, কেন এভাবে টাকা খরচ না করে জমাতেন নাফিস। তিনি বলেন, ‘পরে আমি বুঝি যে ও তো তোর জন্যই সব করত। তুই যেন একটা ভালো ব্যাট দিয়ে খেলতে পারিস বা ভালো কিছু করতে পারিস। আমি ওকেও বলছি, তোকেও বলছি ওর কিন্তু বাংলাদেশের অন্যতম সেরা টেস্ট খেলোয়াড় হওয়ার সুযোগ ছিল। আমি এখনও বলি, হতে পারেনি। তবে ওর সব তুই পাইছিস। এই আরকি।’
নাফিসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমেছে ১১ টেস্ট ও ১৬ ওয়ানডে খেলে। অথচ তার বয়স এখন মাত্র ৩৪। যে বয়সে কি না অন্যান্য দেশের খেলোয়াড়রা থাকেন জীবনের সেরা ফর্মের কাছাকাছি পর্যায়ে, সে বয়সে সাংগঠনিক কাজে নাম লিখিয়েছেন নাফিস।
তিনি বর্তমানে নিজের নামের পাশাপাশি ‘তামিমের বড় ভাই’ হিসেবেও অনেক পরিচিত। ছোট ভাই তামিম যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম লেখান, ততদিন ফর্মের পড়তির কারণে দল থেকে জায়গা হারিয়ে ফেলেছিলেন বড় ভাই নাফিস। পরে বেশ কয়েকবার নিজেকে প্রমাণ করলেও, জাতীয় দলের দরজা খোলেনি তার জন্য।