গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য। এতে জড়িয়ে প্রাণ হারাচ্ছে প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ সামুদ্রিক কচ্ছপগুলো।
ইতোমধ্যেই অন্তত ২০টি মৃত কচ্ছপ খুঁজে পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা, উদ্ধার করা হয়েছে আরও কয়েক ডজন আহত কচ্ছপ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত শনিবার থেকেই বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে ভেসে আসছে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিকের বোতল, মাছ ধরা জাল ও বয়া। আর রোববার থেকে বালির ওপর পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে মৃত কচ্ছপ।
বাংলাদেশের বন বিভাগ জানিয়েছে, ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতে এটাই প্রথমবার এত বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ভেসে আসার ঘটনা।
বন বিভাগের মুখপাত্র সোহেল হোসেন বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, ‘সকাল থেকেই আহত কচ্ছপগুলোকে উদ্ধার করতে ছুটে যান শত শত স্থানীয় মানুষ। আমরা মৃত কচ্ছপগুলোতে পুঁতে ফেলেছি আর জীবিতগুলোকে সাগরে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।’
সৈকত পরিষ্কার বিষয়ক দাতব্য সংস্থা ‘প্লাস্টিক চ্যারিটি বাংলাদেশ’ জানিয়েছে, তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সৈকতের মাত্র ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই ৫০ টনের ওপর বর্জ্য ও এর মধ্যে ২০টি অলিভ রিডলি কচ্ছপের মরদেহ পেয়েছেন।
জসিম উদ্দিন নামে স্থানীয় এক জেলে বলেন, ‘আমি জীবনেও এত মৃত কচ্ছপ সৈকতে পড়ে থাকতে আর এত বর্জ্য ভেসে আসতে দেখিনি।’
বাংলাদেশের অন্যতম কচ্ছপ ও কাছিম বিশেষজ্ঞ শাহরিয়ার সিজার রহমান জানিয়েছেন, উদ্ধার কচ্ছপগুলোর বেশিরভাগেরই বয়স অন্তত ৩০ বছর।
‘সেভ দ্য ন্যাচার বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, প্রতিবছর সাম্রদ্রিক জাহাজ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর উৎপাদিত অন্তত ২৬ টন বর্জ্য বাংলাদেশের সৈকতে ভেসে আসে। তিনি বলেন, ‘এটি প্লাস্টিক আগ্রাসনের নতুন ঘটনা। এটি আমাদের সামুদ্রিক বৈচিত্র্যের জন্য চরম হুমকি।’
স্থানীয় জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।