করোনাভাইরাসের কারণে সব দেশই তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিযেছে। কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমন অবস্থায় তিন মাস ধরে একা সমুদ্রের বুকে ঘুরে বেড়াতে হলো সিঙ্গাপুরের এক নাগরিককে।
জানা যায়, করোনা মহামারিতে যে দেশেই প্রবেশের চেষ্টা করেছেন তারাই তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। ফলে সেই সমুদ্রেই কাটাতে হয়েছে দিনরাত। এক পাল তোলা নৌকায় ভেসে বেঁচে থাকতে হয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা ৫৯ বছরের অং তেচুং তার ২ ইন্দোনেশিয়ান বন্ধুকে সঙ্গী করে প্রশান্ত মহাসাগরে ভ্রমণে বের হন একটি পালতোলা নৌকায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই ২ ইন্দোনেশিয়ান জানতে পারেন করোনার কারণে তাদের দেশের সীমান্ত সিল হতে চলেছে।
তাই তারা আর ঝুঁকি না নিয়ে দেশে ফেরেন। মাঝপথ থেকেই ২ জন ফিরে যাওয়ায় একা হয়ে পড়েন তেচুং। তিনি এরপর নিজেও স্থির করেন ফিরে যাবেন। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
ভাসতে ভাসতে তিনি পৌঁছে যান প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর কাছে। এর মধ্যেই অনেকগুলো দিন কেটেছে। নৌকায় থাকা খাবারও প্রায় ফুরিয়েছে। পানীয় জলও নেই বললেই চলে।
এ পরিস্থিতিতে তেচুং প্রথমে পাপুয়া নিউগিনিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা জানিয়ে দেয় করোনার কারণে কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না।
সেখানে সুযোগ না পেয়ে তেচুং হাজির হন সলোমন দ্বীপে। সেখানেও একই ঘটনা ঘটে তার সঙ্গে। তুভালুতে ঢুকতে গেলেও একই বাধা পেতে হয় তাকে। তবে সেখান থেকে কিছু খাবার আর পানি দিয়ে সাহায্য করা হয় তাকে।
এরপর তিনি স্থির করেন ফিজির কাছে যাবেন। ৬ দিন, ৬ রাত নৌকা বেয়ে ২৮ এপ্রিল ফিজির জলসীমায় পৌঁছন তিনি। সেখানে প্রবেশাধিকার চাইলেও তখনই অনুমতি মেলেনি।
তাই ফিজির জলসীমাতেই ভাসতে থাকেন তিনি। ২ দিন পর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ফিজির উপকূলরক্ষী বাহিনী।
দেশটির ভুডা বন্দরে নিয়ে আসা হয় তাকে। সেখানে তার যাবতীয় ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। পরে আশ্রয় দেওয়া হয় তাকে। তেচুংকে আশ্রয় দেওয়ায় ফিজিকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার।