রেল সেবা বাড়াতে আরো ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ ট্রেন কেনা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০টি মিটার গেজ ডিজেল-ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ ও ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় গতকাল বুধবার রেলভবনে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত বছর ডিজেল ও বিদ্যুত্শক্তিচালিত ২০টি মিটার গেজ লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে। এবার ক্যারেজ (কোচ) সংগ্রহের চুক্তি হলো। এসব ক্যারেজের মধ্যে একটি কোচ থাকবে বুলেটপ্রুফ। রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক হাসান মনসুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুংশিন আরএসটি-পসকো ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে কান্ট্রি ম্যানেজার জং বাম লি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা ও রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিমূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৬৫৮ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার ৬৩ টাকা। এ প্রকল্পটি দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরের দিন থেকে ১৮ থেকে ৩০ মাসের মধ্যে কোচগুলো পাওয়া যাবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী দেশ। রেলওয়েসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা সহযোগিতা করছে। এ কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত হলে বেশি পরিমাণে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। যাত্রীরা এর সুফল ভোগ করবে।’ এ সময় কোচের মান চুক্তি অনুযায়ী ঠিক রাখার জন্য ঠিকাদারকে অনুরাধ জানান তিনি।
মন্ত্রী জানান, এই যাত্রীবাহী ক্যারেজগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্টেইনলেস স্টিল বডি, বায়ো-টয়লেট যুক্ত থাকবে, স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেকব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোরসহ আধুনিক সুবিধা যুক্ত থাকবে। ১৫০টি কোচের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপিং বার্থ ৩০টি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ ৩৮টি, শোভন চেয়ার ৪৪টি, খাবার গাড়িসহ (কোচ) শোভন চেয়ার কোচ ১৬টি, পাওয়ার গাড়িসহ শোভন চেয়ার কোচ ১২টি, রাষ্ট্রীয় পরিদর্শনের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি একটি, খাবার গাড়ি একটি, পাওয়ার গাড়ি একটি ও পরিদর্শন কার একটি।
রেল মন্ত্রণালয় বলছে, কোচ সংগ্রহ প্রকল্পের উদ্দেশ্য পুরনো ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ প্রতিস্থাপন করা। ক্যারেজের স্বল্পতা দূরীকরণ, আধুনিক, নিরাপদ ও উন্নত যাত্রীসেবা, বর্ধিত চাহিদা মেটাতে নতুন ট্রেন চালু, মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি, মিটার গেজ ও ডুয়েল গেজ সেকশনে নিরাপদ ও উন্নত ট্রেন পরিষেবা নিশ্চিত, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিষেবা বৃদ্ধি করা।