বিপদসীমার উপর ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র, পানিবন্দি অর্ধলক্ষাধিক মানুষ


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24, prosenjit bangla movie, jeeter bangla movie, songsar bangla movie, bengali full movie, bengali movies 2019, messi vs ronaldo, lionel messi stats, messi goals, messi net worth, messi height


উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতে হু হু করে বাড়ছে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি। ক্রমাগত পানি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে এই দুই নদীর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। প্লাবিত হয়ে পড়েছে দুধকুমার, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চল। আগামী ৫ থেকে ৬ দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে জেলায় মাঝারি মেয়াদি বন্যা বিরাজ করবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শুক্রবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত গত ১২ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়ে নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁয়ে চিলমারী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সদর উপজেলার ধরলা অববাহিকার নি¤œাঞ্চল সহ ধরলা ও ব্রহ্মুপুত্র অববাহিকার যাত্রাপুর, পাঁচগাছী, ভোগডাঙ্গা ও ঘোগাদহ ইউনিয়ন এবং নাগেশ্বরী, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বর্ষার শুরু থেকে ভাঙনে রুদ্র রূপ নেওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ অবাহিকার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তার ইউনিয়নের পোড়ার চর, ঝুনকার চর এবং চর কালির আলগার প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।

এদিকে ঘোগাদহ ইউনিয়নের আরাজি কুমরপুর, রাউনিয়া, চর রসূলপুর ও কাশিচর এলাকার কয়েক হাজার সনুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়া।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, ৯ নং ওয়ার্ডের মশালের চর সহ ৬ নং ও ৮ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তবে তীব্র নদী ভাঙনের ফলে মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ওই ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।

এছাড়াও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চিলমারীর অষ্টমীচর ও নয়ারহাট ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গৃহহারা হয়ে পড়ছেন একের পর এক পরিবার।

নয়ারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা জানান, তার ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। সাথে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ইউনিয়নের দুইশ’ বিঘার আশ্রয়ন প্রকল্পের কয়েকটি ঘর বিলিন হওয়ার পাশাপাশি হুমকিতে রয়েছে পুরো আশ্রায়ন প্রকল্প সহ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ।

এছাড়াও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চর ঘাউরারকুটি গ্রামের একাংশ বিলীন হয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ২০টি পারিবার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, আগামী কয়েকদিন জেলার উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার বেশ কিছু অঞ্চলে মাঝারি মাত্রার বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে যা এক সপ্তাহকাল স্থায়ী হতে পারে।

জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার প্রশাসনের তরফ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পেপার’স লাইফ/কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি