হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হঠাৎ পেটের অসুখ দেখা দিলে এমাজউদ্দীন আহমদকে দ্রুত ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর বেশ বমি হচ্ছিল। সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মরদেহ রাজধানীর কাঁটাবন এলাকার বাসায় নেওয়া হয়েছে।
তাঁর মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলেন, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এমাজউদ্দীন আহমদ মারা যান। বাদ আসর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বপালন করেন।
এমাজউদ্দীন আহমদ খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ এবং গবেষক-পর্যালোচক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসনব্যবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। দেশ-বিদেশের জার্নালে তাঁর প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান এবং সৃজনশীল লেখার জন্য তিনি দেশে ও বিদেশে সম্মানিত হন। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে তিনি একুশে পদক পান।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এবং উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বাদ জুমা এমাজউদ্দীন আহমদের বাসার পাশে কাটাবন ঢালের জামে মসজিদে প্রথম জানাজার নামাজ হবে। এরপর বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।