শীঘ্রই দেশে ফিরছেন ২৯ হাজার প্রবাসী


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24, prosenjit bangla movie, jeeter bangla movie, songsar bangla movie, bengali full movie, bengali movies 2019, messi vs ronaldo, lionel messi stats, messi goals, messi net worth, messi height


করোনা মহামারীতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রায় ২৯ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন রকমের অপরাধের দায়ে কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরছেন তারা বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যে থাকা ওইসব বাংলাদেশিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার তাঁদের ক্ষমা করে নিজ নিজ দেশে পাঠাচ্ছে। আবার অনেকে ওই দেশগুলোতে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। তাঁরাও সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফিরছেন।

গতকাল বুধবার (৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্ত মন্ত্রণালয় বৈঠকে এইসব জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তার সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন।

বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশি যাঁরা বিদেশ থেকে ফিরতে চান তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনা হবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তিন হাজার ৬৯৫ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। তাঁদের বড় অংশই মধ্যপ্রাচ্যে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া। করোনাভাইরাসের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের সরকারগুলো তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছে এবং তাঁদের প্রথম দিকে পাঠাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আরো অনেকে আসবেন। আমাদের ধারণা মতে, আগামী কয়েক সপ্তাহে ২৮ হাজার ৮৪৯ জন প্রবাসী দেশে আসতে পারেন। আমরা কিভাবে ব্যবস্থা করছি সেগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেছি।’

তিনি বলেন, বিদেশে গিয়ে করোনাভাইরাসের কারণে আটকে পড়েছেন এমন বাংলাদেশিদের ভারত, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গত কয়েক দিনে দুই হাজার ৮৫৩ জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য থেকে আরো ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

প্রবাসী কর্মীদের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুয়েত সরকার অবৈধদের ক্ষমা ঘোষণা করেছে। যাঁরা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে নাম নিবন্ধন করেছেন তাঁদের বিভিন্ন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।

কুয়েতে প্রায় সাড়ে চার হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন ক্যাম্পে আছেন। শোনা যাচ্ছে, ক্যাম্পে ঠিকমতো খাবার-দাবার দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মিশনকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুয়েত সরকার যখনই চাইবে আমরা তাঁদের নিয়ে আসব। কুয়েত সরকার ১৯০ জনের তালিকা পাঠিয়েছিল। আমরা সম্মতি দিয়েছি। ১৪৪ জন ফিরেছেন। এয়ারলাইনস চালু হলে যখনই ফ্লাইট শিডিউল দেবে তখনই সবাইকে আমরা নিয়ে আসব।’

মন্ত্রী জানান, মালদ্বীপ থেকে আজ ৪০০ জন ফিরবেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ১৫০০ জনকে পাঠাবে। অবশ্যই আমরা তাঁদের গ্রহণ করব। মালদ্বীপে প্রবাসীদের যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য খাবার দিয়েছি। আগামীতে আরো দেব।’

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএইতে যথেষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশি আটকে আছেন। ইউএই সরকার সবাইকে বলছে নিয়ে আসতে।

শুধু আমরা আনছি না, পাকিস্তান ও ভারত আনছে। ভারতের প্রায় এক লাখ ৯৭ হাজার কর্মীকে ইউএই থেকে ফেরত নেওয়ার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাঁরা আসতে চান অবশ্যই তাঁদের আমরা নিয়ে আসব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামীতে সবচেয়ে বেশি ফিরবে কুয়েত থেকে। সৌদি আরব কতজনকে পাঠাবে সে বিষয়ে সংখ্যা এখনো দেয়নি। তবে চার হাজার ২৬২ জনের আসার সম্ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, জর্দান থেকে কর্মী ফেরত আসার সম্ভাবনা আছে। ওমান থেকে এক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ফিরতে পারেন। লেবাননে অনেকে বেশ ঝামেলায় আছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনা পয়সায় আনার চেষ্টা চলছে। কাতার থেকেও ফিরতে পারেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইরাকে বড়সংখ্যক লোকের চাকরি চলে গেছে। তাদের কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় তা আমরা ভাবছি।

প্রবাসীদের মরদেহ ফেরত আনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে কারো মৃত্যু হলে সৌদি আরব, ইউএই মরদেহ দেবে না। ইসলামী নিয়মে সেখানেই তাঁদের দাফন হবে।

অন্য দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে কেউ মারা গেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচওর) গাইডলাইন অনুযায়ী কোয়ারেন্টিন সিস্টেমে পাঠাবে। সেই মরদেহ দেশে আনলেও আত্মীয়-স্বজন কেউ চেহারা দেখতে পারবে না। কারণ মরদেহের কোয়ারেন্টিন বক্স তৈরি করা হবে। বাক্স খোলা যাবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিবারগুলোতে বিষয়টি অনুধাবন করে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু হলে বিদেশেই দাফনের বিষয়টি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানান। মন্ত্রী বলেন, ফ্লাইট চলাচল শুরু হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা চাইলে দেশে আসতে পারবেন।