অবসাদে ভুগছেন ৭৬% বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী


paperslife


শিক্ষা কার্যক্রমের চাপে প্রায় ৭৬ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী অবসাদে ভুগছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশন। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়েছে।

আজ শনিবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, প্রায় ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাঁরা করোনা–পরবর্তী একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রমের চাপের কারণে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও গঠনমূলক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের এসব মানসিক অবসাদের পেছনে দায়ী কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—দীর্ঘ বিরতির কারণে সৃষ্ট সেশনজট, পড়াশোনায় অনীহা, পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হতাশা ও শিক্ষাঙ্গনে পঠিত বিষয় বুঝতে না পারা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর আগে করোনার সময় ২০২০ সালের মার্চ থেকে ১৫ মাসে আত্মহত্যা করেছিলেন ১৫১ জন শিক্ষার্থী। সংখ্যাগত তথ্য তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত আত্মহত্যার সংবাদ থেকে সংকলিত করেছে। এর ভিত্তিতে তারা আত্মহত্যার পেছনের কারণ বুঝতে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা শিরোনামে একটি জরিপ পরিচালনা করে।

আরও পড়ুনঃ চিকিৎসায় নোবেল পেলেন সান্তে প্যাবো

জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

জরিপে উঠে এসেছে, করোনা–পরবর্তী বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত পড়াশোনা এবং কম সময়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যক্রম শেষ করার জন্য এক ধরনের চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এটা ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। একই সঙ্গে একাডেমিক পরীক্ষাগুলোর মধ্যবর্তী সময় এবং মানসিক চাপ কাটিয়ে ওঠার সুযোগ কম থাকায় ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অন্যদিকে দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসায় ৭৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মবিশ্বাস আশঙ্কাজনক হারে কমে এসেছে। শিক্ষাজীবনে বাধা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পড়াশোনা এবং সিলেবাস দ্রুত শেষ করার চাপে প্রায় ৬৭ শতাংশের জীবন প্রভাবিত হয়েছে বলেও জরিপে উঠে আসে।
জরিপে ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছেন, তাঁরা বিভিন্ন মেয়াদে সেশনজটের শিকার হয়েছেন। প্রায় ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাঁরা ন্যূনতম এক বছর সেশনজটের শিকার হয়েছেন।

জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। জরিপটিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থী ছিলেন যথাক্রমে ৪৪ ও ৫৬ শতাংশ। প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের।