করোনা হাসপাতালে আস্থা নেই মানুষের!


bdnews24 bangla newspaper, bangladesh news 24, bangla newspaper prothom alo, bd news live, indian bangla newspaper, bd news live today, bbc bangla news, bangla breaking news 24


মহামারী করোনার প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব বেড়ে গেছে অনেকখানি। করোনার চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে বেশ কিছু হাসপাতাল। কিন্তু করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে যাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর কুড়িল এলাকায় ২ হাজার ১৩ শয্যার কোভিড হাসপাতাল চালু হয়েছে মে মাসে। হাসপাতালটি বসুন্ধরা গ্রুপের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে। মৃদু ও মাঝারি উপসর্গে থাকা করোনা রোগীদের জন্য এই হাসপাতাল তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের সবচেয়ে বড় এই করোনা হাসপাতালে রোগী নেই বললেই চলে।

রোববার (১৯ জুলাই) দুপুরে ওই হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, রোগী ভর্তি মাত্র ১৭ জন। ১ হাজার ৯৯৬টি শয্যা খালি। অর্থাৎ, ৯৯ শতাংশ শয্যা খালি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখানে ১৮১ জন চিকিৎসক, ৯৩ জন নার্স এবং ‘পর্যাপ্তসংখ্যক’ ওয়ার্ডবয়, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দিয়েছে।

সোমবারও (২০ জুলাই) ওই হাসপাতালে ১৭ জন রোগী ভর্তি ছিল। তবে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বিচ্ছিন্ন কোনো এলাকায় নয়। এটি গাজীপুর শহরের মধ্যেই। এই হাসপাতালে ১০০ শয্যা নির্ধারিত শুধু করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরসহ আট বিভাগের নির্ধারত হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা এবং গতকাল ভর্তি থাকা রোগীর বিষয়ে পরিসংখ্যান দিয়েছে।

তাতে বলা হচ্ছে, সারা দেশে সাধারণ শয্যা ও আইসিইউ শয্যা যথাক্রমে ১৫ হাজার ৪৬৮টি ও ৫৩৫টি। এতে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৯৯ ও ২৮৩ জন। সাধারণ শয্যা খালি ছিল ৭২ শতাংশ। আইসিইউ শয্যা খালি ছিল ৫১ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি শয্যা খালি রাজশাহী বিভাগে এবং কম শয্যা খালি বরিশাল বিভাগে। এই দুই বিভাগে শয্যা খালির হার যথাক্রমে ৮৯ ও ৩৮ শতাংশ।

করোনা হাসপাতালের ওপর মানুষের চূড়ান্ত রকমের আস্থাহীনতাকে সাধারণ মানুষের এই বিমুখতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব।

তিনি বলেন, হাসপাতালের শয্যা খালি থাকছে। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার ওপর মানুষের ব্যাপক অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে অনেকে ভেবেছেন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন না। অনেকে ভাবছেন ভর্তি হতে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, সবার হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, হাসপাতালভীতি, হাসপাতালের ভিড় কমানোর সরকারি প্রচেষ্টা—এসবের কারণে মানুষ হাসপাতালে যেতে চাচ্ছে না।

এসবের পাশাপাশি আছে জেকেজি ও রিজেন্টের করোনা পরীক্ষার দুর্নীতি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব–রেষারেষি। ফলে বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো থেকে ক্রমেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ।