বাংলাদেশে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন পেয়েছে চীনের সিনোভেক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কম্পানি লিমিটেডের তৈরি নতুন করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) টিকা।
পরীক্ষার জন্য সংস্থাটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার (বিএমআরসি)। এ অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই পরীক্ষা চালাবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
আইসিডিডিআরবি ঢাকার সাতটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাকর্মী ও রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালাবে। পরীক্ষাটি চলবে ছয় মাস।
জানা যায়, আইসিডিডিআরবির সূত্র অনুসারে, চুক্তিসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে পরীক্ষা চলবে ছয় মাস। ঢাকার সাতটি সরকারি হাসপাতালের চার হাজার ২০০ চিকিৎসাকর্মী ও রোগীর ওপর পরীক্ষা চালানো হবে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরে টিকা প্রয়োগ করা হবে। অর্ধেক টিকা পাবে না।
আইসিডিডিআরবির টিকা বিশেষজ্ঞ ড. কে জামানের নেতৃত্বে একটি দল এই পরীক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন বলে ওই সূত্রগুলো জানিয়েছে। পরীক্ষাটি শুরু করতে আরো মাসখানেক সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
আইসিডিডিআরবির একাধিক সূত্র জানায়, বিএমআরসির আনুষ্ঠানিক চিঠি পাওয়ার পর তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন নেবে। এরপর সিনোভেক কম্পানির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করবে। আর চুক্তি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা পরীক্ষা শুরু করবে না বা আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়াও জানাতে চায় না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, টিকা তৈরির ক্ষেত্রে প্রথম পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়। তারপর প্রয়োগ করা হয় প্রাণীর শরীরে। এতে সফল হলে টিকা নিবন্ধন করতে হয়। তারপর শুরু হয় মানুষের শরীরে প্রয়োগ। মানুষের শরীরে প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে অল্প কিছুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে প্রয়োগ হয়। এরপর আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের শরীরে দেওয়া হয়।
পরের ধাপে বা তৃতীয় ধাপে আরো বেশি মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করা হয় এবং চূড়ান্ত বা চতুর্থ ধাপে আসে সবার মধ্যে প্রয়োগের পর্যায়টি। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষার সময় মূলত টিকার মাধ্যমে কী ধরনের ক্ষতি হয় তা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং তৃতীয় ধাপে দেখা হয় কত সময়ে এবং কতটা কার্যকর হয় সেই বিষয়টি।
উল্লেখ্য, গত মাসে চীনের বিশেষজ্ঞদল সফর করে যাওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে চীনের তৈরি টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পরীক্ষা সফল হলে দেশের টিকা উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এই টিকা উত্পাদনের সুযোগ পেতে পারে।