“সচেতনতার মাধ্যমেই ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষা সম্ভব”


পুষ্টিবিদ ফারজানা


ডায়াবেটিস– বর্তমান বিশ্বের একটি অত্যন্ত পরিচিত রোগ। এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। তবে ২০৪০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দ্বিগুন বা তার বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

প্রতিনিয়ত যেভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে তাতে বিশেষজ্ঞরা বলেছে রোগটি এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারের উদ্বেগের কারণ।

বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৪ নভেম্বর পালন করা হয় বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ উপলক্ষে দেশের বারডেম সহ সকল ডায়াবেটিস সেন্টার এবং হসপিটাল গুলোতে প্রতি বছর ফ্রি ডায়াবেটিস পরীক্ষা, পদযাত্রা ও ডায়াবেটিস বিষয়ক আলোচনার আয়োজন করা হয়।

ডায়াবেটিস থেকে নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। আর এ সচেতনতা শুধুমাত্র ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানার মাধ্যমেই সম্ভব।

ডায়াবেতিস হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যাতে মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিসরণ কমে যায় ফলে দেহ কোষে গ্লুকোজ পৌছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এছাড়া এক বাংলাদেশি গবেষকের গবেষণা থে কে বে র হয়ে ছে আমাদে র অন্ত্রে উপস্থিত উপকারি অনুজীবের সংখ্যা কমে গেলে ডায়াবেটিস হবার ঝুকি বেড়ে যায়।

সরল শর্করা যেমন চিনি গুড় মিষ্টি মধু খেলে ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়ে তেমনি সাদা রুটি সাদা আটা, সাদা চাল খেলে ও এর থেকে চিনির পরিমাণ বাড়ে অন্যদিকে

গবেষকদের দাবি শর্করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত শাকসবজি প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন মাছ মাংস ডিম দুধ ডাল বাদাম শর্করার পাশাপাশি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে।

এর পাশাপাশি দৈনিক কিছুটা সময় ব্যায়াম বা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটলে ও শর্করার মাত্রা অনেকটাই কমে যায়।

প্রতিদিনের অনিয়মিত খাওয়া , মাত্রাতিরিক্ত ফাস্টফুড বা জাঙ্ক ফুড, চিনি, কার্বনেটেড বেভারেজ অতিরিক্ত চা কফি পান জর্দা সিগারেট এসব কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রক্ত শর্করার মাত্রার পাশাপাশি দৈনিক পর্যাপ্ত ঘুম সাত থেকে আট ঘন্টা পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন। এছাড়াও অতিরিক্ত রাত জাগা, সকালে দেরিতে ওঠা ,সকালের নাস্তা না খাওয়া বা দেরিতে খাওয়া অনিয়মিতভাবে খাবার খাওয়া আমাদের অন্ত্রের উপকারী অনুজীবের সংখ্যা কমিয়ে দেয় যার ফলে শুধু ডায়াবেটিস নয় অন্যান্য ননকমিউনিকেবল ডিজিজের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়।

বারবার জাল দেয়া খাবারগুলো শুধু খাবারে স্বাদই নষ্ট করে না এর পাশাপাশি নষ্ট করে দেয় ভিটামিন, মিনারেলস এবং প্রোটিনও ডিন্যাচিউরড হয়ে যায়। এজন্য যথা সম্ভব টাটকা খাবার খাওয়া উচিত।

সময়মত পরিমাণমতো সুষম খাবার গ্রহণ এর সাথে দৈনন্দিন কিছুটা কাইক শ্রম ও পর্যাপ্ত ঘুম অর্থাৎ নিয়মতান্ত্রি ক জীবন ব্যবস্থাই পারে কে বলই ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থেকে দূরে রাখতে আবার সঠিক নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের মাধ্যমে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি ডায়াবেটিস নিয়ে থাকতে পারে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং কর্মঠ।

সুতরাং আসুন ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানি সুষম খাবারের পরিকল্পনা করার জন্য নিয়মিত পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করি, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ডায়াবেটিস নিয়ে সুস্থ ও কর্মক্ষর্ম মতা থাকি ।

ফারজানা আনজিন

ডেপুটি চিফ নিউট্রিশন অফিসার

ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্ক

ধানমন্ডি-ইব্রাহীম জেনারেল হাসপাতাল ও ডিসিইসি

যুগ্ম সম্পাদক

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস নিউট্রিশন সোসাইটি