মাশরাফি-শুভাশিস বিতর্ক; বাড়াবাড়ি না করার অনুরোধ মাশরাফির




চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের রান তাড়ার সেটি ১৭তম ওভার। শুভাশিস দারুণ এক ইয়র্কার করলেন, ঠেকালেন ব্যাটসম্যান মাশরাফি। নিজের বলে ফিল্ডিং করেই বল মাশরাফির দিকে ছুড়ে মারতে উদ্যত হলেন শুভাশিস। মাশরাফি হাত ইশারায় বললেন, ‘যা’।
আর যায় কোথায়, শুভাশিস জ্বলে উঠলেন তেলেবেগুনে। তেড়ে গেলেন মাশরাফির দিকে। মাশরাফির অবাক দৃষ্টি। শুভাশিস তবু থামার পাত্র নন। সতীর্থরা এসে যখন টেনে নিচ্ছেন, শুভাশিস তখনও হাত-পা ছুড়ে গর্জে যাচ্ছেন। মাশরাফি স্রেফ তাকিয়ে একদৃষ্টে!
সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন কোটি কোটি দর্শক। এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তুমুল আলোচনা, যেখানে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে শুভাশিস রায়কে।
তবে এ ঘটনায় ভীষণ উদ্বিগ্ন মাশরাফি। রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক অনুরোধ করলেন, এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে।
রংপুর ইনিংসের ১৭তম ওভারে বল ছোড়া নিয়ে মাশরাফির সঙ্গে কথার লড়াই হয় শুভাশিসের। এরপরই শুভাশিসকে রীতিমতো শূলে চড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিপিএলের সৌজন্যে যতই দুজন দুই দলে খেলুন, যতই তপ্ত বাক্যবিনিময় হোক তাঁদের মধ্যে, মাশরাফি-শুভাশিসের বড় পরিচয় তাঁরা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়।
এ ঘটনায় অনুজ সতীর্থকে নিয়ে যেটা হচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন মাশরাফি এক ভিডিও বার্তাতে ভক্ত-সমর্থকদের বললেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বলছি যে মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। শুভাশিসও বাংলাদেশের হয়ে খেলে। তারও ভালোবাসা প্রাপ্য। মাঠে যেটা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে বলে এসেছি যে আমি দুঃখিত। সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে আমার অমন প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক হয়নি। শুরুটা আমার কাছ থেকেই হয়েছে। বলটা হয়তো সে থ্রো করতে চেয়েছিল। আমি যদি প্রতিক্রিয়া ওভাবে না করতাম, হয়তো বা ও চলে যেত। আমার জায়গা থেকে আমি দুঃখিত। আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন।’
মাশরাফির অনুরোধ মাঠের ঘটনা মাঠেই রাখতে। শুভাশিসকে আগলে রেখে অধিনায়ক বললেন, ‘সে প্রতিশ্রুতিশীল ফাস্ট বোলার। সে অনেক লড়াই করে বাংলাদেশ দলে খেলছে, যেটা আমিও খেলছি। মানুষ হিসেবে যদি বলি, আমি যতটা সম্মান পাচ্ছি, অবশ্যই তারও ততটুকু প্রাপ্য। আজ যে ঘটনাটা ঘটেছে, এমন ঘটনা ঘটে থাকে মাঠে। যেটা আমরা স্বাভাবিকভাবেই নিই। আজ কেন নিতে পারছি না, জানি না। আমি শুভাশিসের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, ও আমার ছোট ভাই। ওকে ওভাবে বলা উচিত হয়নি বা ওভাবে শুরু করা উচিত হয়নি। তাহলে হয়তো ওর মাথাটা ঠান্ডা থাকত। তখন দুই দলের জেতার সম্ভাবনা ছিল। একটাই অনুরোধ, এটা নিয়ে আর বেশি বাড়াবাড়ি না করে এখানেই শেষ হোক। মাঠে যা হয়, বাইরে এসে ভুলে যাই। সে আমার সতীর্থ, ছোট ভাই। অবশ্যই আমরা এটা মনে রাখব না। আপনারা এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করলেই এখানেই শেষ হয়ে যাবে।’
সব শেষে মাশরাফি অভিনন্দন জানালেন জয়ী দল চিটাগংকে, দারুণ বল করা শুভাশিসকে। আর হাসিমুখে অভিনন্দন জানালেন দুর্দান্ত বোলিং করা তাসকিন আহমেদকে।
আরও পড়ুন; ছেলেরা সব স্মার্ট হয়ে যাচ্ছে, ভালোই…